প্রতিষ্ঠানের ইতিহাস

সুখানপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় শিহিপুর গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পূর্বে সুখান পুকুর ষ্টেশনের পার্শ্ববর্তী স্হানে অবস্হিত ছিল। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মরহুম খান বাহাদুর কমর উদ্দিন আহমেদ উক্ত বিদ্যালয়টি অনুমোদন করে, বিদ্যালয়ের জন্য উক্ত জায়গাটি দান করেন (নিজেস্ব সম্পত্তি)।বিভিন্ন সমস্যার কারনে উক্ত স্থানে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছিল না। সেই কারনে সুখান পুকুর বন্দরের কিছু সন্মানীয় ব্যক্তি শিহিপুর ও নওদাবগা গ্রামের সন্মানীয় ব্যক্তিবর্গের সহিত সাক্ষাত করেন এবং বিদ্যালয়টি স্হানান্তরের কথা বলেন। মরহুম খান বাহাদুর কমর উদ্দিন খান সাহেব পেশাগত কারনে ব্যস্ত থাকায় বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করতে পারেন নি। পরবর্তী সময়ে মরহুম খান বাহাদুর কমর উদ্দিন আহম্মেদের নির্দেশে তাহারই সহোদর মরহুম শামস উদ্দিন আহম্মেদ স্হানীয় লোকজনের সহযোগিতায় বিদ্যালয়টি স্হানান্তর করেন। মরহুম মরহুম শামস উদ্দিন আহম্মেদ বিদ্যালয়ের জন্য ৮৩ শতাংশ জমি দান করেন। বিদ্যালয়ের অবশিষ্ট জমি দান করেন মরহুম কদ্দুস সরকার, প্রফুল্ল মালি প্রমুখ । উক্ত ব্যক্তি দ্বয়ের দানকৃত জায়গায় ১৯১৪ সালে বিদ্যালয়টি নতুন রুপে যাত্রা শুরু করে। যেহেতু বিদ্যালয়টি পূর্বে সুখান পুকুর মাইনর স্কুল নামে নামকরন করা হয়েছিল, তাই স্থানান্তরের পর বিদ্যালয়েটি সুখান পুকুর মাইনর বিদ্যালয় নামে পুনর্বহাল করা হয়। পরবর্তী সময়ে বিদ্যালয়টি উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে পূর্ব বগুড়ার এই প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠানটি তৎকালীন কলকাতা বোর্ডের অধীনে পরিচালিত হত। পূর্ব বগুড়ার এই প্রাচীনতম বিদ্যালয়টি পুঃনপ্রতিষ্ঠায় মরহুম শামস উদ্দিন সরকার সাহেব মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। তিনি এই পবিত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্হানান্তরের উদ্দোগ গ্রহন করেন, জমি দান করেন এবং অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন। বিভিন্ন অবদানের কারনে তাহাকে এই বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে গণ্য করা হয়।পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রাথমিক পর্যায়ে অবকাঠামো নির্মাণে শালুকগারি গ্রাম নিবাসী প্রখ্যাত ”বালে উদ্দিন ফকির” সাহেবের জৈষ্ঠ্য পুত্র মৃতঃ অছির উদ্দিন ফকির সাহেব ৩২ বান্ডিল টিন দান করেন। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে তাহার এই দানের জন্য, তাকে এই বিদ্যালয়টি অন্যতম দাতা সদস্য হিসাবে গণ্য করা হয়। পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ ”১৯৩১ সালের বড় বন্যায় সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর ভীষণ ক্ষতি সাধিত হয়, উক্ত ক্ষতি নিরসনের লক্ষে বিদ্যালয়টির পাকা দালান নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়। সে লক্ষে মরহুম শামস উদ্দিন সরকার সাহেব তাহার আবাসস্থল সংলগ্ন ২ টি ইটভাটা তৈরি করে (S.H.S) মনোগ্রাম খচিত ইট তৈরি করেন। উক্ত ইট দিয়ে সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ”E” আকৃতির পাকা দালান নির্মাণ করা হয় এবং ছাত্র- ছাত্রীদের পানীয় সমস্যা সমাধান কল্পে একটি কূপ (ইন্দ্রা) নির্মাণ করেন। ঐ দালানগুলো ইতিহাসের সাক্ষ প্রদান করলেও, বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে ঐ কূপ’টি আর দৃশ্যমান নয়। সময়ের বিবর্তনে ও পরিবর্তনের ছোঁয়ায় বিদ্যালয়টি বর্তমান রুপ ধারন করেছে।
পার্শ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভুমিকাঃ
১. শিহিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২১ শতাংশ জমি দান ও অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা প্রদান।
২. সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ নিবন্ধনের মোট খরচ ১০,০০০/- টাকার মধ্যে ৮০০০/- টাকা নগদ তহবিল প্রদান এবং নিবন্ধিত হওয়ার পর সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের তহবিল হতে ৩০,০০০/- টাকা ব্যয় নির্বাহে ১০০ হাত টিনের ঘর নির্মাণ।
৩. সুখান পুকুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠানে সিংঘভাগ জমি দান সহ অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা প্রদান । এই প্রতিষ্ঠানের প্রত্যক্ষ সহায়তায় পার্শ্ববর্তী ৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়কে অত্র এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের জননী বলা হয়।

তথ্য সংগ্রহেঃ স্মরণিকা  সুখান পুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উৎযাপন উপলক্ষে প্রকাশিত ।